প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের পরিমার্জিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য


প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য:


বাংলাদেশের শিশুর দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক, নৈতিক, মানবিক ও নান্দনিক বিকাশ সাধন এবং তাকে উন্নত জীবনের স্বপ্নে উদ্ভুদ্ধ করা।
প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য
০১। শিক্ষার্থীদের মনে সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা’আলার প্রতি অটল আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তোলা যেন এই বিশ্বাস তার চিন্তা ও কর্মে অনুপ্রেরণা যোগায় এবং আধ্যাত্মিক, নৈতিক, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে সহায়তা করে।
০২। স্ব-স্ব ধর্মের অনুশাসন অনুশীলনের মাধ্যমে শিশুকে নৈতিক ও চারিত্রিক গুনাবলি অর্জনে সহায়তা করা।
০৩। শিশুর মনে জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা, সাম্য, সহমর্মিতা ও সহযোগিতাবোধ জাগানো এবং তাকে শান্তিময় পরিবেশের প্রতি অগ্রহী করে তোলা।
০৪। শিশুর মনে মানবাধিকার, পারস্পরিক সমঝোতা, সহযোগিতা, বিশ্বভ্রাতৃত্ব, আন্তর্র্জাতিকতাবোধ এবং বিশ্বশান্তি ও সাংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ জাগিয়ে তোলা।
০৫। কায়িক শ্রমের প্রতি আগ্রহ ও শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগানো এবং অর্থপূর্ণ শ্রমের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে সহায়তা করা।
০৬। পারিবারিক, সামাজিক ও বিদ্যালয়ের কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহনের মাধ্যমে শিশুকে তার নিজের ও অপরের অধিকার, কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।
০৭। শিশুকে পরমত সহিষ্ণুতা ও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুশীলনের অভ্যাস গঠনে সহায়তা করা।
০৮। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত করার মাধ্যমে শিশুর মনে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটানো, ত্যাগের মনোভাব সৃষ্টি করা এবং দেশগঠনমূলক কাজে উদ্ভুদ্ধ করা।
০৯। জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টি লাভে সহায়তা করা এবং এগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগিয়ে তোলা।
১০। শরীরচর্চা ও খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর শারীরিক বিকশে সহায়তা করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করা।
১১। জীবন পরিবেশে কার্যকর ব্যবহারের জন্য এবং শিক্ষার মাধ্যমে হিসেবে বাংলা ভাষার সকল মৌলিক দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা।
১২। শিশুকে গাণিতিক ধারণা ও দক্ষতা এবং যৌক্তিক চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা অর্জনে সহায়তা করা।
১৩। বিদেশি ভাষা হিসেবে ইংরেজির প্রাথমিক দক্ষতা অর্জন এবং এ ভাষা ব্যবহারে সহায়তা করা।
১৪। শিখন-দক্ষতা ও জ্ঞানের প্রতি যথার্থ কৌতুহল সৃষ্টি কওে আজীবন শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করা।
১৫। জীবনযাত্রা মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান অর্জন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বনে সমস্যা সমাধানের অভ্যাস গঠন এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে সহায়তা করা।
১৬। তথ্যের উৎস, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, ব্যবহার, প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ সম্পর্কে ধারণা লাভে সহায়তা করা।
১৭। শিশুকে পরিবেশ সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে সহায়তা করা এবং পরিবেশ দূষণ রোধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করে এর উন্নয়ন ও সংরক্ষণে উদ্ভুদ্ধ করা।
১৮। সংগীত, চারু ও কারুকলার ইত্যাদির মাধ্যমে সৃজনশীল, সৌন্দর্যচেতনা, নান্দনিকবোধ ও বুদ্ধির বিকাশ এবং সৃজনশীলতার ও সৌন্দর্য উপভোগে সহায়তা করা।
১৯। সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণে যতœশীল হওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে সহায়তা করা।
২০। শিক্ষার্থীর মধ্যে ন্যায়বোধ, কর্তব্যবোধ, শৃঙ্খলাবোধ, শিষ্ঠাচার, মিলেমিশে বাস করার মানসিকতা ইত্যাদি বাঞ্ছিত নৈতিক ও সামাজিক গুণাবলী বিকাশে সহায়তা করা।
২১। মানুষের মৌলিক চাহিদা ও পরিবেশের ওপর জনসংখ্যার প্রভাব সম্পর্কে ধারণা লাভ এবং এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে সহায়তা করা।
২২। শিক্ষার্থীর সামর্থ, প্রবণতা ও আগ্রহ অনুসারে তাকে পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তি ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা এবং পরবর্তী স্তরের শিক্ষা লাভের উপযোগী করে গড়ে তোলা।